মোহাম্মদ মাসুদ
চট্টগ্রাম: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলার নব গঠিত তিন কমিটি বাতিলের দাবী জানিয়েছে একাংশ, কমিটি বাতিল না করলে হাসনাত আবদুল্লাহকে চট্টগ্রামে অবাঞ্ছিত ঘোষণা। "হাসনাত আবদুল্লাহ ও রাফি কাউকে গুনার টাইম নাই", ছাত্রলীগ পুনর্বাসনের অভিযোগ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী সমন্বয়কের একাংশের চট্টগ্রাম মহানগরসহ উত্তর ও দক্ষিণ জেলাসহ নতুন ৩ কমিটির ছাত্র সমন্বয়ক সব কমিটিকে বাতিল অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে সংবাদ সম্মেলন করে । ৩ কমিটির অন্তত ৫০ থেকে ১০০ জন পদত্যাগ করেছেন। পরে লালখান বাজার মোড়ের এক পাশ সড়ক অবরোধ করে।
এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ দাবি করে ৩ দফা দাবি তুলেন। গত ৫ ই আগস্ট এর আগে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়তায় নিজেদের
জীবনঝুঁকি সত্বেও আন্দোলন করে। আন্দোলনরতদের নতুন কমিটি থেকে উপযুক্ত পদ না পাওয়া, পদ বঞ্চিত ও নতুন কমিটি থেকে বাতিল হওয়া সুবিধা বঞ্চিত নানা ইস্যুতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলনে তাদের এ দাবি তুলে ধরেন।
১৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্ররা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে নতুন কমিটি থেকে সুবিধা বঞ্চিত ছাত্র সমন্বয়করা নতুন কমিটিকে অবাঞ্ছিত বাতিল ঘোষণা করেন। পরে বিকেল ৩টা থেকে নগরীর লালখানবাজার মোড়ে আন্দোলনের একাংশের নেতারা এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন— নতুন কমিটিতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকা জোবায়রুল আলম, নগর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকা চৌধুরী সিয়াম ইলাহি ও সংগঠক আবু বাছির নাঈমসহ আরো অনেকে।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রামে সড়ক অবরোধ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলার তিন ইউনিটের কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করা হয়। অবরোধে অন্য পাশ দিয়ে যান চলাচলের প্রভাবে লালখান বাজারসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে যানজট দেখা দিয়েছে। অবরোধকারীরা জানিয়েছেন, কমিটি বাতিল না হলে তারা সড়ক ছাড়বেন না।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে আগামী ৬ মাসের জন্য চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার কমিটির অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেল। ৩টি কমিটিতে মোট ৭৫৪ জনের নাম রয়েছে। কমিটি গঠনের প্রতিবাদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ৩ কমিটির অন্তত ৫০ থেকে ১০০ জন পদত্যাগ করেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কমিটিতে সম্মুখযোদ্ধাদের সুযোগ দেওয়া হয়নি। যাদের বিরুদ্ধে নারী হেনস্তা ও কিশোর গ্যাংকে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে, তাদের নিয়ে একপক্ষীয় কমিটি দেওয়া হয়েছে। সনাতন ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। নারী সহযোদ্ধাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এর আগে অবরোধকারীরা সোমবার দিবাগত রাতে ঘোষিত তিন কমিটি বাতিল না করা পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেলকে চট্টগ্রামে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পাশাপাশি নতুন কমিটি গঠন করতে কেন্দ্রীয় কমিটিকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে সড়ক অবরোধের আল্টিমেটাম দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী সমন্বয়কারী ছাত্র বক্তারা বলেন,চট্টগ্রামের সকল ছাত্র সমন্বয়ে কমিটি বাতিলের দাবিতে আল্টিমেটামসহ ৩ দফা দাবি ঘোষণা করেন। তিন দফার মধ্যে রয়েছে ১/ আজ বিকাল তিনটার মধ্যে গতকাল প্রকাশিত কমিটি বাতিল করতে হবে। মূল আন্দোলনকারীদের নিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে নতুন কমিটি বাদ দিয়ে অন্তবর্তীকালীন কমিটি ঘোষণা করতে হবে। ২/আগামী তিন দিনের মধ্যে বিগত দিনের সকল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্তে প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। অপরাধ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থায় শাস্তির আওতায় দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৩/ব্যক্তির পছন্দের গঠিত এই কমিটির সকলের জড়িতদের নাম প্রকাশ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছাত্ররা নিজেদের ৫ই আগস্ট এর আগে মূল আন্দোলন কারীদের বাদে সমন্বয়হীন এই কমিটি দ্রুত বাতিলের দাবি জানায়।
নতুন কমিটিকে নানা সমালোচনা করে অভিযোগে নেতিবাচক নানা ইস্যুতে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়। গঠিত এ কমিটিকে প্রহসন মূলক, একপাক্ষিক, আন্দোলনের পরে নিজেদেরকে ছাপিয়ে প্রচার প্রসারকারীদের,ব্যবসায়ীদের আমলাদের, নারী হেনস্তাকারী, কিশোরগ্যাং, চাটুকারিতা,ডটগার্ড, ভ্যানগার্ড, লীগ পৃষ্ঠপোষকদের নতুন কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়। সমন্বয়হীন এমন নতুন কমিটি গঠন করে আন্দোলন শহীদের সাথে বেঈমানি বলে তুলনা করা হয়।
নতুন কমিটিতে বৈষম্যমূলক একতর কমিটি গঠনসহ পূর্ব থেকে অভিযোগ করা সত্ত্বেও নানা অনিয়ম ইস্যুতে কেন্দ্রীয় কমিটির অবহেলা গাফিলতি নানা অনিয়ম সহ বিভিন্ন সমালোচনা করে নেগেটিভ ডেসক্রিপশন বিষোদগার করে সুবিধা বঞ্চিতরা স্লোগান দেয়। প্রয়োজনে কঠোর থেকে কঠোর হুঁশিয়ারি ও আন্দোলন করা হবে বলে ভবিষ্যতে আরো বেগবান করার ঘোষণা প্রদান করে।
প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় কমিটির সকল কার্যকলাপকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিকে দায়ী করা হয়। চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত রাফিকে নতুন কমিটিকে শুভেচ্ছা জানানোর কারণে। তাকেও উক্ত কমিটির সাথে জড়িত করে নানা নীতিবাচক মন্তব্য করা হয়। প্রয়োজনে হাসনাত আব্দুল্লাহকে বীর চট্টগ্রাম থেকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হবে।
এ সময় উপস্থিত আন্দোলনকারী সমন্বয়কারীর মধ্যে চট্টগ্রামের জেলা সমন্বয়ক, আন্দোলনকারী ছাত্রসহ অন্যান্য আন্দোলনকারী সমন্বয়ক"সহ উপস্থিত ছিলেন ও ছাত্রবৃন্দরা বক্তব্য রাখেন।