সোহেল রানা,রাজশাহী,প্রতিনিধি:
এক জমি থেকে অন্য জমি,বিস্তির্ণ মাঠ জুড়ে যতদূর চোখ যায় বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন।দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ সবুজ বর্ণ থেকে এখন সোনালী বর্ণ ধারণ করতে শুরু করেছে।রোদের আলোয় পাকা-আধা পাকা ধান সোনালি রঙে চিক চিক করছে।কোথাও ধান কাটা শুরু হয়েছে আবার কোথাও ধান কাটার দিন গুনছে কৃষক।তানোর উপজেলার ২টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে বোর ধানের আবাদি জমিতে এখন সকল প্রকার ধানের শীষে সোনালী রঙ ধরতে শুরু করেছে।শেষ মুহূর্তে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।কিছু কিছু এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে আবার কিছু এলাকায় কয়েক দিনের মধ্যে শুরু হবে ধান কাটার মহা উৎসব।মাঠে পরিশ্রমের ফলানো ফসল গোলায় তোলার স্বপ্ন কৃষাণ-কৃষাণীদের চোখে মুখে।এখন চলছে ধান কাটার প্রস্তুতি।এখন ধান কাটার শ্রমিক ও হারবেষ্টার মেশিন নিয়ে মাঠে নামবে কৃষকেরা।বাজারে কামারের দোকান গুলোতে কাস্তে কেনার ধুম।এছাড়াও বাঁশের তৈরি(আঞ্চলিক ভাষা) মাথল,প্লাাস্টিকের বস্তা,ত্রিপল ক্রয় করছে কৃষকেরা,ঘাস পরিষ্কার করে মাটি দিয়ে লেপে নির্মাণ করছে ধানের খৈলান।নতুন ধান উঠবে কৃষকের গোলায়।কৃষাণ-কৃষাণীরা গোলা,খৈলান,আঙ্গিনা পরিষ্কার করায় ব্যস্ত।আর মাত্র কয়েক দিন পরই কৃষকের উঠানে আস্তে শুরু হবে কষ্টে ফলানো সোনালী ধান।ভরে উঠবে ধানের গোলা।মুখে ফুঁটবে সোনালী হাসি।সরেজমিনে উপজেলা কামার গাঁ, কালিগঞ্জ,মুন্ডমালা,বিল্লি,কলমা,পাঁচন্দর,চৌবাড়িয়াসহ ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা ঘুরে ও কৃষি সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বললে তারা জানান,বরো আবাদে ধান রোপণ শুরু হয় কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাস থেকে এবং ধান কাটা শুরু হয় বৈশাখ থেকে চলে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত।আগাম জাতের ধান রোপণের কারণে বৈশাখ মাসের শুরু থেকেই অল্প অল্প করে ধান কাটা শুরু করেছে।এবং আগামী কয়েক দিন পর থেকে আমাদের এলাকায় পুরোদমে ধান কাটা চলবে। উপজেলার বেশিরভাগ এলাকাতেই আগাম জাতের ধান চাষে জাত অনুযায়ী শুরু হওয়া ধান কাটা শুরু করেছে। এবং চলবে পুরো এপ্রিল মাস জুড়েই।যথা সময়ে জমিতে সার,কীটনাশক প্রয়োগ ও নিবিড় পরিচর্যার কারণে এবার বোরো আবাদে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।উপজেলা কামার গাঁ ইউনিয়নের পারিশো গ্রামের কৃষক তপন সরকার,বাতাস পুর গ্রামের সামাদ,মাশিন্দা গ্রামের জসিম উদ্দিন,কৃষ্ণপুর গ্রামের আক্কাস আলীসহ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা বলেন,গতবারের চেয়ে এবার ধান ভাল হয়েছে।আর কয়েক দিন পর পুরোদমে কাটা শুরু করা যাবে।এবার আবহাওয়া সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত সার,কীটনাশক ও বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং ক্ষেতে রোগ-বালাই,পোকা আক্রমণ কম হওয়ায় ফসল ভাল হয়েছে।এবার শেষ সময়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে স্বপ্নের সোনালী ধান যথাসময়ে ঘরে তুলতে পারবো।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন,বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন ধরণের কাজ করে আসছি। কৃষকরা যেন লাভবান হতে পারে এবং কোন প্রকার সমস্যায় না পড়েন এ জন্য আমাদের উপসহকারী অফিসাররা সার্বক্ষণিক নজর রাখছে।আশা করি,বিগত মৌসুমের তুলনায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। এতে কৃষক অনেকটা লাভবান হবে।তিনি আরও বলেন, বারো আবাদে কৃষকদের চাষে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন সময় কৃষকদের প্রক্ষিণ ও সরকারিভাবে প্রণোদণা দেয়া হয়েছে। অল্প খরচে অধিক ফলন যাতে কৃষকরা করতে পারেন সেজন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে তাদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।কৃষকদের আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর হিসেবে গড়ে তুলতে কৃষি বিভাগ প্রতিনিয়ত আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
Leave a Reply