সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জ জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা,তাহিরপুর যাদুকাটা নদী বালি মহালের ইজারাদার, আসছে সম্মেলনে তাহিরপুর উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-১ আসনের আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সেলিম আহমদ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। সুনামগঞ্জ জেলা যুবদল নেতা অলিউর রহমানের দায়েরকৃত অপহরণ ও চাঁদাবাজী মামলায় এজাহারভুক্ত না থাকা সত্বেও স্থানীয় প্রভাবশালীর ইন্ধনে সন্দিগ্ধ আসামী হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর পুলিশ তাকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট হেলাল উদ্দিন এর আদালতে হাজির করে জামিন প্রার্থনা করলে জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তাহিরপুর থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম, গ্রেফতারকৃত শ্রমিকলীগ সভাপতি সেলিম আহমদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন জানালে আদালত বুধবার রিমান্ড শুনানীর দিন ধার্য্য করেছে।
মঙ্গলবার সকাল ৮টায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সেলিমের শহরের হাসন নগর এলাকার নিজ বাসার সামন থেকে গ্রেফতার করা হয়। যার তাহিরপুর থানার মামলা নং ০৭, তারিখ: ১২/০৮/২০২২, দ:বি: ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩০৭/৩৮৫/ ৩৮৬/৩৮২/৩৬৪/ ৫০৬/১১৪/ পেনাল কোড ১৮৬০ রুজু হয় । উক্ত মামলা জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি সেলিম আহমদ এর নাম এজাহারভুক্ত ছিল না। এজাহারভুক্ত আসামীদের মধ্যে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মৃত জালাল উদ্দিনের পুত্র তারেক আহমদ, মোর্শেদ আলম, তানভীর, সোহাগ, লতিফ, পলাশ ও আব্দুল হক।
স্থানীয় সুত্র জানায়, সাবেক বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ও জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যার্ত মানুষের মাঝে দিনরাত প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নিজস্ব তহবিল থেকে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে আসায় স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেন এবং ১৫ আগষ্টের জাতীয় শোক দিবসে তাহিরপুরে বিশাল কাঙ্গালীভূজের আয়োজন করায় স্থানীয় প্রভাবশালীর রোসানলের শিকার হন। তারই জের ধরে অন্যায়ভাবে সাজানো চাঁদাবাজী ও অপহরণ মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। সেলিম আহমদ রাজনৈতিক অঙ্গণে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের ধরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের অভিমত।
তাহিরপুর উপজেলা আ’লীগ একাংশের সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জানান, জেলা যুবদল নেতার দায়েরকৃত অপহরণ ও চাঁদাবাজী মামলায় জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি সেলিমের নাম না থাকা সত্বেও তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমার ধারনা হচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতার নির্দেশেই সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা তার নি:শর্ত দ্রুত মুক্তি দাবী করছি।
তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের একাংশের সভাপতি অধ্যক্ষ আলী মুর্তুজা জানান, সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকায় একজন নেতার বাইরে কোন নেতা তৈরী হউক সেটা চান না একটি ক্ষমতাশীন চক্র। মানুষরুপী শয়তানের কারনে তাহিরপুরে কোন নেতা তৈরী হবে না। কোন শিক্ষিত ও জনপ্রিয় দলীয় নেতাকে মাথা তোলার সুযোগ দিবে না ঐ সমস্ত মানুষরুপী শয়তানেরা। গত ১৪ বছরে আমাদের আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। জামায়াত বিএনপি’র নেতাদের আওয়ামীলীগের নেতা বানানো হয়েছে। তৃনমূলের নেতাকর্মীদের কোন মূল্যায়ন করা হয়নি। সেলিম তাহিরপুরের উদীয়মান নেতা সে একজন শ্রমিকদের ভালবাসারমত মানুষ। তাকেও ষড়যন্ত্রমুলকভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে। সেলিম মামলার কোন এজাহারভুক্ত আসামী ছিল না। সেলিম আহমদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ১৫ই আগষ্ট জাতীয় শোক সভায় হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিই তার কাল হয়ে দাড়িয়েছে। তার জনপ্রিয়তা দেখে মানুষরপী শয়তানরা তাকে আগামী দিনের রাজনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিতে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলায় ফাসাঁনোর পরিকল্পনা করে গ্রেফতার করিয়েছে। সেলিমের মুক্তির দাবীতে মিছিল সমাবেশ করা হবে। সে কখনও এ ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত না।
এব্যাপারে মামলার বাদীর মোবাইল নম্বরে জানতে বার বার ফোন দেওয়া হলে মোবাইল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান (সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) এর বক্তব্য জানতে বার বার সরকারী মোবাইল নম্বরে কল দিলে রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply