নিউজ ডেস্ক :
বাবার মরদেহ বুধবার ( ১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এদিকে পরদিন এসএসসি পরীক্ষা। শেষ পর্যন্ত বাবার মরদেহ রেখে অশ্রুজল চোখে পরীক্ষা দিলেন সুমনা আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী। পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সুমনা এক হাতে চোখ মুছছেন, অন্য হাতে কলম দিয়ে লিখছেন পরীক্ষার খাতায়। মাঝে মধ্যেই ফুঁপিয়ে কেঁদেও উঠেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রংপুরের কাউনিয়া মোফাজ্জল হোসেন সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
সুমনা কাউনিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। সে উপজেলার শহীদবাগ ইউনিয়নের স্বাব্দী গ্রামের শাহজাহান আলীর মেয়ে।
জানা গেছে, বুধবার ফজরের নামাজ শেষে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সারাদিন আর বাড়িতে ফেরেনি সুমনার বাবা শাহজাহান আলী। ওইদিন সন্ধ্যায় বালাপাড়া ইউনিয়নে মৌলভীবাজার এলাকায় তিস্তার শাখা মানাষ নদীতে মাছ ধরার সময় মাঝিরা পানির কচুরিপানার মধ্যে অজ্ঞাত এক মরদেহ দেখতে পায়।
পরে সুমনার স্বজনরা খবর পেয়ে তার বাবার মরদেহ শনাক্ত করেন।
পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করতে মর্গে পাঠায়। বেলা ১১টার আগেই চোখ মুছতে মুছতে পরীক্ষা কেন্দ্রে যায় সুমনা। সহপাঠী ও কেন্দ্র শিক্ষকদের সহযোগিতায় প্রথম দিনের বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। পরীক্ষার্থী সুমনার চোখে জল দেখে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন।
সুমনার সহপাঠী মিথিলা ও শাবানা জানান, পরীক্ষার হলে বাবার শোকে পুরো সময়ই কেঁদেছে আর খাতায় লিখেছে সুমনা। এ দৃশ্য দেখে তার সহপাঠী ও শিক্ষকরা শোকাহত হয়েছেন।
কাউনিয়া মোফাজ্জল হোসেন সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব মো. আইযুব আলী জানান, পরীক্ষার্থী সুমনা আক্তারের বাবার মৃত্যু ঘটনা আমরা শুনেছি। আমরা তাকে সান্ত্বনা দিয়ে পরীক্ষা দিতে উৎসাহ দিয়েছি। সবার সঙ্গে বসে পরীক্ষা দিলে তার জন্য ভালো হবে ভেবে কোনও বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। সে সবার সাথে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা দিয়েছে।
Leave a Reply