আকাশ আহমেদ, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলায় গৃহবধূ হালিমা খাতুন ওরফে মিষ্টিকে (২২) ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই ঘটনায় দগ্ধ তাঁর স্বামী রিপন মিয়া (২৪) আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দগ্ধ হালিমাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

দগ্ধ রিপন মিয়া রামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে উপজেলার আমদাদপুর কমলাবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এই দম্পতির স্বজনদের অভিযোগ, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঘরের বাইরে থেকে জানালা দিয়ে দুর্বৃত্তরা পেট্রল ছিটিয়ে আগুন লাগিয়ে হালিমাকে হত্যা করেছে। এ সময় তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর স্বামী রিপন দগ্ধ হয়েছেন। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনাস্থলে গিয়ে নাশকতার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, মশার কয়েল থেকে সূত্রপাত হওয়া আগুনে তাঁরা দগ্ধ হয়েছেন।

আজ বেলা দুইটার দিকে অগ্নিদগ্ধ রিপনের ফুফাতো ভাই শাহিনুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, রামেক হাসপাতাল থেকে হালিমাকে ঢাকায় নেওয়ার পথে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী-নাটোর সড়কের বানেশ্বর এলাকায় তাঁর মৃত্যু হয়। রিপনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তিনি বর্তমানে রামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।

পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খালিদ সাইফুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত ১১টার দিকে ওই দম্পতিকে হাসপাতালে আনা হয়। তখন দুজনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক ছিল। হালিমার শরীরের ৮০ শতাংশের ওপরে পুড়ে গেছে। রিপনের শরীরের প্রায় ৬৫ শতাংশ দগ্ধ। দুজনেরই শ্বাসনালি দগ্ধ হয়েছে। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তৎক্ষণাৎ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।

পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুল আলম বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। তবে বিষয়টি সর্বাত্মক গুরুত্ব দিয়ে ইতিমধ্যে তদন্তকাজ শুরু করা হয়েছে। এটা নাশকতা কর্মকাণ্ড, দুর্ঘটনা নাকি আত্মহত্যার চেষ্টা তদন্ত করে আসল সত্য খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

নওগাঁর পত্নীতলা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘গতকাল অগ্নিদগ্ধ রিপনের বক্তব্যের সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর কোনো মিল পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ ঘটনাকে আমাদের কাছে নাশকতা কর্মকাণ্ড মনে হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, মশার কয়েল থেকে সূত্রপাত হওয়া আগুনে তাঁরা দগ্ধ হতে পারেন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে।’