রাসেল ইসলাম, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মাইদুল ইসলাম শাহার দূর্নীতি-অনিয়ম ও সরকারি ত্রাণ আত্নসাৎ করার কারণে জরুরী ভিত্তিতে তাকে প্রত্যাহারসহ তদন্তপুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন হাতীবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যানসহ-চেয়ারম্যান এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি।
স্থানীয় সাংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন এমপি, জেলা প্রশাসক লালমনিরহাট, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মহাপরিচালককে অভিযোগের অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু বকর সিদ্দিক শ্যামল।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, হাতীবান্ধা উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম শাহা গত ২০২১ সালে যোগদান করার পর থেকে প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিকা, অনিয়ম ও সরকারের বরাদ্দকৃত সকল ধরণের ত্রাণ সামগ্রী আত্মসাৎ করে আসছেন। তার অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে টিআর, কাবিখা, কাবিটা নিয়ে হাতাহাতি-মারামারি এবং আদালতে মামলা পর্যন্ত হয়েছে, যা বর্তমানে চলমান রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদেরকে সরকারি বরাদ্দকৃত ত্রাণ সামগ্রী না দিয়ে তিনি নিজেই নামমাত্র ত্রাণ বিতরণ দেখিয়ে বাকিসব আত্মসাৎ করে আসছেন এবং ইউনিয়ন পরিষদের দ্বারা বাস্তবায়িত সকল প্রকল্পের ক্ষেত্রে ২০% টাকা গ্রহণ করে থাকেন।
গত বন্যায় বন্যা কবলিত মানুষের জন্য যে যে ত্রাণ বরাদ্দ এসেছিলো তিনি তার অর্ধেক নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। উপজেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত টিআর, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্পের ২০% টাকা গ্রহন পূর্বক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম শাহার সরকারি ত্রাণ আত্মসাৎ, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম দুর্নীতির প্রতি অতিষ্ঠ হয়ে উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাসোসিয়েশনে এক জরুরী বৈঠকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম শাহাকে দ্রুত প্রত্যাহার করাসহ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ গুলো তদন্ত পুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগে উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৮ জন ইউপি চেয়ারম্যান স্বাক্ষর করেন।
এমনকি এ বিষয়ে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা না হলে ডিসেম্বরের মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা দেন চেয়ারম্যান এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি।
ইতিপূর্বে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম শাহার নামে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সিঙ্গিমারী ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দুলু বলেন, এই পিআইওর আমলে আমরা সব কিছু থেকেই বঞ্চিত হচ্ছি। সরকারি ত্রাণ, সাহায্য সহযোগিতা, কম্বল, দুম্বার মাংস সবকিছু তিনি একক সিদ্ধান্তে পছন্দের লোক দিয়ে নামমাত্র বিতরণ করেন। দলীয় লোক দিয়ে যদি সব কাজ করা হয় তাহলে আমাদের জনপ্রতিনিধি হয়ে কি লাভ। এই পি আইওর যে অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে সেটা পরিবর্তন না হলে আমি ডিসেম্বর মাসের পর পদত্যাগ করব বলে মাসিক সমন্বয় মিটিং এ ঘোষণা দিয়েছি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম শাহা বলেন, এ বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নেই। তবে তারা যেহেতু অভিযোগ করেছে। তদন্ত আসুক, তদন্তের পর কমিটি যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন সেটাই হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, এখন পর্যন্ত কোন কাগজ হাতে পাইনি। ইউপি চেয়ারম্যানগন যেহেতু মন্ত্রী বরাবর অভিযোগ করেছে। সেখান থেকেই তদন্ত কমিটি গঠন করে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
Leave a Reply