সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ইফতিয়াজ সুমন।
গত কয়েকদিন ধরে ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে অবিরাম বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণের কারণে সুনামগঞ্জের নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে সুনামগঞ্জ শহরের নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে অনেকেই বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।
সুনামগঞ্জের ষোলঘরস্থ সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং গত ২৪ ঘন্টায় ১০২ মিঃমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। নদীর পানি কূল উপচে নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকা শুরু হয়েছে। এদিকে জেলার ছাতক উপজেলায় সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ১৫২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ফলে শহরের বিভিন্ন অলিগলি ও বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর, নবীনগর, ধারারগাও, জেলরোড, উত্তর আরপিননগর, তেঘরিয়া ও বড়পাড়া এলাকার সড়ক ও কিছু ঘরবাড়িতে পানি ওঠেছে। শহরতলির সুরমা নদীর উত্তরপাড়ের ইব্রাহিমপুর, সদরগড়সহ নদীরপাড়ের গ্রামগুলোর নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানিতে ওঠেছে। এছাড়া সুনামগঞ্জের ছাতক,তাহিরপুর,দিরাই,শাল্লা ও জামালগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ ছাতক সড়কে পানি ওঠায় ছাতকের সঙ্গে সারাদেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে এবং জেলা শহরের সাথে তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার একমাত্র সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানিয়েছেন গতকয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জ সদর,বিশ^ম্ভরপুর,তাহিরপুর,ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৫শত হেক্টর বোরো ধান পানিতে নিমর্জ্জিত হয়েছে যার ক্ষতির পরিমান হবে ৫ কোটি টাকা। তবে পানি কমে গেলে ক্ষতির কোন আশংঙ্কা থাকবে না । ইতিমধ্যে বণ্যা পরিস্থিতি নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন ,মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি এবং সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘরস্থ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং তাহিরপুরের যাদুকাটাসহ অন্যান্য নদীর পানিও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন ইতিমধ্যে বন্যার আগাম সর্তকতার কারণে জেলা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাাদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সরকারের উচ্চমহলে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। বন্যার যেকোন পরিস্থিতিতে সরকারের মাধ্যমে যারা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হবে তাদেরকে ত্রান সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
Leave a Reply