নিউজ ডেস্ক
মার্কিন জরিপেও শেখ হাসিনার আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট বা আইআরআই গত ৮ আগস্ট সংস্থাটির ওয়েবসাইডে ‘ন্যাশনাল সার্ভে অব বাংলাদেশ,মার্চ-এপ্রিল-২০২৩’শীর্ষক একটি জরিপ প্রকাশিত হযেছে।তাতে বলা হয়েছে, দেশের ৬৪ জেলার ১৮ বছর বা তার বেশি ৫ হাজার অংশগ্রহণকারীর উপর একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়।
জরিপে অংশ নেয়া ৭০ শতাংশ জনগণই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা জানিয়েছেন।
জরিপে অংশ্রগ্রহণকারীদের কাছে প্রশ্ন ছিল, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার কাজকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? ৩০ শতাংশ ‘খুব ভালো’ এবং ৪০ শতাংশ মোটামুটি ভালো বলেছেন। জরিপে ২০ শতাংশ শেখ হাসিনার কাজকে ‘মোটামুটি’ খারাপ এবং ১০ শতাংশ ‘খুব খারাপ’ বলে মন্তব্য করেছেন। চার্ট বা গ্রাফ গুলোর যোগফল মার্জিন অব এরর’ ধরা হয়েছে প্লাস বা মাইনাস ১ দশমিক ৪ শতাংশ।
জরিপে শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, উন্নত রাস্তাঘাট, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, দেশের সড়ক, মহাসড়ক ও সেতু তৈরিতে ৮৭ শতাংশ অগ্রগতি, ৮৬ শতাংশ মানুষের সুপেয় পানির ব্যবস্থা, ৮৪ শতাংশ মানুষের সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ প্রাপ্তি, ৭৭ শতাংশ মানুষ মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণ এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে সাফল্যের হার ৮১ শতাংশ।
প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই এসব সম্ভব হয়েছে বলেও জরিপে সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপের কারণে সহিংস চরমপন্থা ও মৌলবাদ হ্রাস পেয়েছে।
এছাড়া দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়েছে বলে মনে করেন জরিপের অধিকাংশ অংশগ্রহণকারীগণ। সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক স্টিভ সিমা বলেন, অবাধ,সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য জনসমর্থন অবশ্যই উৎসাহব্যঞ্জক।
ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট বা আইআরআই হলো-যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। যা ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।যারা বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্র বিকাশের লক্ষ্যে প্রকাশনা, দল গুলোর অবস্থান নিয়ে জরিপ ও গবেষণা নিয়ে কাজ করে থাকে।সংস্থাটি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়,ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট,ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি ও অন্যান্য দাতা সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হয়।
সংস্থাটির গ্রহণযোগ্যতা পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃত।
আইআরআই-এর জরিপ এটাই প্রথম নয়। সাধারণত প্রতিটি নির্বাচনের আগে সংস্থাটি এমন ধরণের জরিপ করে থাকে। ২০১৮ সালে সেপ্টেম্বর মাসে আইআরআই পরিচালিত এক জরিপে বলা হয়েছিল,শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সঠিক পথে চলছে মনে করে ৭৭.৭ শতাংশ জনগণ।
এছাড়া ২০১২ সালের ১২ মে ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্যালাপ বিশ্বের তৎকালীন সরকার প্রধানদের জনপ্রিয়তা নিয়ে একটি জরিপ করেছিল।
সেখানে বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনার কাজের উপর ৭৭ শতাংশ জনগণের আস্তা আছে।জরিপে বলা হয়,শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা এশিয়ার নেতাদের মধ্য প্রথম,বিশ্বে সপ্তম স্থানে রয়েছেন।তালিকায় শেখ হাসিনার পিছনে ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং,জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিকো নোদার, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জন ফিলিপ কি,ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং ইউধোইয়োনো, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী নুয়েন তাং ডাং, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড।
শুধুমাত্র আইআরআই-ই নয়, বিশ্বের খ্যাতনামা বড় বড় সংস্থা গুলো শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গ শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বলেছেন,বাংলাদেশে আগামী সাধারণ নির্বাচনে তিনি টানা চতুর্থ মেয়াদে জয়ী হবেন।তিনি জয়ী হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যেও ‘সময়োচিত সংস্কার পদক্ষেপ’ গ্রহণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছেন শেখ হাসিনা।
সম্প্রতি বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ বলেছে,২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ১ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হতে যাচ্ছে।ওয়াশিংটন ম্যাগাজিন ফরেন পলিসি এক শিরোনামে লিখেছে,তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশের উদীয়মান তালকা হওয়ার দীর্ঘ অভিযাত্রা।দ্য ইকোনমিস্ট বলেছে,৬৬ টি উদীয়মান দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৭ম। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতে,২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৪ তম অর্থনীতির দেশ।
নিউইয়র্ক ভিত্তিক ম্যাগাজিন নিউজউইক ‘অদম্য শিরোনামে’ এক প্রতিবেদনে বলেছে,শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দ্রুত রূপান্তর ঘটেছে এবং আগামী অর্ধ শতাব্দীর মধ্যে বাংলাদেশের শুধু আঞ্চলিক নয়,বরং বৈশ্বিক পাওয়ার হাউজ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।একই ধারাবাহিকতায় মার্কিন আর্থিক প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান সাকসের বলেছে,চলমান অগ্রগতি অব্যাহত থাকলে ২০৭৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ১৬ তম অর্থনীতির দেশ হবে।
শেখ হাসিনার ধারাবাহিক জনপ্রিয়তা এমনি এমনি হয়নি। টানা তিন মেয়াদে দায়িত্ব পালন কালে তিনি বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছেন। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিনত করেছেন। একসময়ের তলাবিহীন ঝুড়ি, এখন সমৃদ্ধ দেশের প্রতিচ্ছবি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যের সবচেয়ে বড় দিক হলো অর্থনৈতিক উন্নয়ন। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, জিডিপির প্রবৃদ্ধি,খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন,দারিদ্র্যের হার ১৮ শতাংশ এবং হতদরিদ্রের হার ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা।সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় দেড় কোটি পরিবারকে সরাসরি সহযোগিতা করা,‘আমার গ্রাম,আমার শহর’ প্রকল্পের আওতায় শহরের সকল সুবিধা গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আনা হয়েছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।পদ্মা সেতু,মেট্রোরেল,কর্ণফুলী ট্যানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস,ঢাকা-কক্সবাজার রেল লাইন, যোগাযোগ ব্যবস্থায় এনেছে নতুন দিগন্ত। এসব পরিবর্তনের সুযোগ সরাসরি জনগণ পাচ্ছে।
Leave a Reply