সাহিদ বাদশা বাবু , লালমনিরহাট ::
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ীঢলের কারনে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ৬ টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। সকাল নয়টাতে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর। ফলে প্লাবিত হয়েছে ভাটিতে থাকা এলাকাগুলো। পানির চাপে ডালিয়া ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে জেলার পাটপ্রাম, হাতিবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। নিম্না লে ইতিমধ্যে পানি ঢুকে গেছে। চরা লেও পানিতে ডুবেছে বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট।
তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,কালমাটি,পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্না ল প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এসব এলাকার মানুষ গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে বন্যার্তরা উচু স্থানে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। অনেকেই উচু স্থানে চুলা জ্বালিয়ে রান্নার কাজ সাড়ছেন। গতকাল থেকে পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন এলাকায় এখনো পানি প্রবেশ করছে। নলকুপ ও টয়লেটে পানি উঠায় বিশুদ্ধ পানি সংকট ও স্যানিটেশন সমস্যায় পড়ছেন তারা।
আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন গ্রামের আমিনুর ইসলাম বলেন, শুক্রবার সকাল থেকেই পানি বাড়ার কারনে বাড়িঘর ডুবে গেছে। আজকেও পানি বেড়েই চলেছে। কিছু রাস্তায় পানিতে তলিয়ে গেছে। বিপদ আর পিছু ছাড়ছে না। একই গ্রামের আসাদ ইসলাম বলেন, সকাল থেকেই পানি হাটু সমান। এ অবস্থায় খাটের উপর চুলা তুলে রান্না-বান্নার কাজ করতে হচ্ছে। গরু-ছাগল বাঁধে নিয়ে গিয়ে রাখছি।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। উজান থেকে নেমে আসা ভারী ঢল আসায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছি।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ-দৌলা বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের কারনে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। ব্যারাজের সবকটি গেইট খুলে পানির গতি নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, উজানের বৃষ্টিপাত কমে না আসা পর্যন্ত পানি প্রবাহ কমার কোন সম্ভাবনা নেই।
Leave a Reply