মো: জুলহাস উদ্দিন হিরো, শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুরে দুই দিনের ব্যবধানে দুই অটো চালকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় জেলার অটো চালকেদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এই নিয়ে গত ছয় মাসে একই কায়দায় মোট ছয় জন অটোচালকে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ঘটেছে।
গত বৃহস্পতিবার নালিতাবাড়ী থানার মন্ডলিয়াপাড়া এলাকায় রাস্তার পাশের ধান ক্ষেত থেকে অটোচালক মোশারফ হোসেনের (৪০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মোশারফ হোসেন নালিতাবাড়ী উপজেলার কাঁকরকান্দি ইউনিয়নের পিঠাপুনি গ্রামের মো. সাফায়েত উল্লাহর ছেলে। এর আগের দিন নকলা উপজেলার ধনাকুশা এলাকার সেফাকুড়ি এলাকা থেকে মাটি চাপা দেয়া অবস্থায় আসাদুজ্জামান আসাদ (১৭) নামের এসএসসি পড়ুয়া এক কিশোর অটোচালকের লাশ উদ্ধার করে নকলা থানা পুলিশ। সে উপজেলার দক্ষিণ পাড়া গ্রামের ফয়জুর রহমানের ছেলে।
এছাড়াও গত বছরের ২ অক্টোবর ঝিনাইগাতী উপজেলার বড় রাংটিয়া এলাকার সীমান্ত সড়কের পাশের একটি খাল থেকে আরব আলী (২১) নামের এক অটোচালক এবং ৮ অক্টোবর ধানশাইল ইউনিয়নের কুচনিপাড়া গ্রামের একটি ধান ক্ষেতের পাশ থেকে মো. শাহ আলম (৪০) নামের আরেক অটো চালকের লাশ উদ্ধার করেন ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ। সদর উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আরও কয়েকটি অনুরুপ ঘটনা ঘটেছে।
এবিষয়ে বাংলাদেশ অটো রিকশা কল্যাণ সোসাইটির শেরপুর জেলার সভাপতি মোস্তফা সাংবাদিকদের বলেন, “পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হত্যা করায় তাদের পরিবার পরিজন পথে বসে যাচ্ছে। তিনি অটো চালকদের নিরাপদ জীবন ও যাত্রী পরিবহনে নিরাপত্তায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।”
এদিকে জেলার নালিতাবাড়ী থানায় অটো ছিনতাই ও চালক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত আসামি নালিতাবাড়ী থানার কাকরকান্দি গ্রামের আঃ জুব্বারের ছেলে মো. আলমগীর হোসেন (২৪) এবং একই উপজেলার কালাকুমা গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে আসামি মো. নুরুল ইসলামকে (৬৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সাথে উদ্ধার করা হয়েছে আলামতসহ ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা। নালিতাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুল আলম ভূইয়ার নেতৃত্বে পুলিশের আভিযানিক দল তাদেরকে গ্রেফতার করে।
এবিষয়ে রবিবার (১৭ মার্চ) দুপুরে শেরপুর পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএম তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেছেন। ব্রিফিংকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কিছু অসাধু লোক অটোরিকশার ব্যাটারি বিক্রি করে অল্প সময়ে বেশি আয় করার জন্য এ ধরনের কাজ করে। তবে পুলিশের নজরদারি অব্যহত রয়েছে। পুলিশ তৎপর আছে বলেই ২৪ ঘন্টার মধ্যে দুটি হত্যা রহস্য উন্মোচন হয়েছে। সেই সাথে দ্রুত সময়ের মধ্যে এর সাথে জড়িতদের সনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা গেছে। আমরা সচেতনতা বৃদ্ধি এবং রাতে অটো চালানার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বৃদ্ধির করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছি।
Leave a Reply