নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইলে কথিত ডাক্তার মহাদেবের অপচিকিৎসা চলছেই। কোন কিছুকেই ভয় পাচ্ছেন না ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধি থেকে রাতারাতি ডাক্তার বনে যাওয়া মহাদেব দাস।
বি এম ডিসি’র রেজিষ্ট্রেশন ছাড়া কোন পল্লিচিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে এন্টিবায়োটিক ঔষধ লিখতে পারবেনা, পারবেনা রোগীদের টেস্ট স্লীপ দিয়ে ডায়াগোনস্টিক সেন্টারে পাঠাতে , আর কথিত ডাক্তার মহাদেব দাস এই কাজগুলো করছেন বাধাহীন ভাবেই।
নড়াইল সদর হাসপাতালের সামনে ( খান ফার্মেসী’র) পিছনে প্রভাবশালী জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার বাসা ভাড়া নিয়ে রীতিমতো চেম্বার বসিয়ে আরোগ্য নিকেতন নাম দিয়ে মোটা অংকের ভিজিট নিয়ে দালালের মাধ্যমে ভাগিয়ে আনা রুগী দেখছেন তিনি।
দীর্ঘদিন মহাদেব দাস ভূয়া ডি এম এফ লাইসেন্সের দোহাই দিয়ে ডাক্তারি করছেন এই নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হলে তিনি তার প্রতারনার কৌশল পাল্টে ভূয়া ডি এম এফ ডিগ্রির পাশাপাশি বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের কমিউনিটি প্যারামেডিক( সিপি) বি, এন এম সি রেজিষ্ট্রেশন নং ৭৯৮৯ এর একজন চিকিৎসক (নন গ্রাজুয়েট)হিসেবে তার ব্যবস্থা পত্রে উল্লেখ করেছেন। যা ২০২৩ সালের ব্যবস্থা পত্রেও ছিলনা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চিকিৎসক জানান, মহাদেব দাসের ডি এম এফ লাইসেন্স ছিল ভূয়া, পত্রিকায় লেখালেখির কারনে নিজেকে নিরাপদ রাখতে অর্থের বিনিময়ে কমিউনিটি প্যারামেডিকের রেজিষ্ট্রেশন নিয়ে এসেছেন তিনি।দীর্ঘদিন সাধারণ রুগীদের সাথে প্রতারণার বিষয়টি আরাল করতেই মহাদেব দাসের এই অভিনব কৌশল,তবে লাভ নেই, সাধারণ কিছু ঔষধ যেমন প্যারাসিটামল, মেট্রোনিডাজলের মত ঔষধ ছারা লিখতে পারবেনা।
স্থানীয় অনৈতিক সুবিধাভোগী কিছু ব্যক্তি নড়াইল শহরের শীর্ষ ফ্রি স্যাম্পল ব্যবসায়ী এবং হাসপাতাল কেন্দ্রিক কিছু দালালের সহায়তায় ভূয়া ডাক্তার মহাদেবের প্রতারনার ব্যবসা এখন জমজমাট।
এ বিষয়ে কথিত ডাক্তার মহাদেব দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে একজন প্রাথমিক চিকিৎসক বলে দাবী করেন।তিনি প্রাথমিক স্বাস্থসেবা দিয়ে রুগীদের অন্যত্র রেফার্ড করেন এবং তিনি বৈধভাবেই সব কিছু করছেন বলে দাবী করেন।
নড়াইলের সিভিল সার্জন ডাঃ সাজেদা বেগম এ বিষয়ে জানান, আমি একাধিকবার মহাদেব দাসকে আমার অফিসে ডেকে এনে তার কাগজ পত্র দেখেছি।তার কাগজ পত্র অনুযায়ী সে এন্টিবায়োটিক বাদে নির্দিষ্ট কিছু সাধারন ঔষধ লিখতে পারবে তার বাইরে নয় এবং রুগীকে সে কোন প্রকার টেস্ট দিতে পারবেনা।এর বাইরে কিছু করলে অবশ্যই আমরা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখব।
সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়ের কঠোর নির্দেশনা থাকায় সারাদেশে অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ও ভূয়াডাক্তারদের বিরুদ্ধে সারাষি অভিযানের অংশ হিসেবে নড়াইলেও একাধিক অভিযানে বিভিন্ন অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে জড়িমানা ও কয়েকজন পল্লিচিকিৎসককে অর্থদন্ড সহ জেল দেওয়া হলেও কতৃপক্ষ মহাদেব দাসের বেলায় অনেকটা নীরব দর্শক, অথচ তিনি সদর হাসপাতালের নাকের ডগায় বসে দির্ঘদিন এই অপকর্ম করে যাচ্ছেন।
এই ভূয়াডাক্তার মহাদেবের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবে প্রশাসন এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।
Leave a Reply