শাকিল আহমেদ, নড়াইলঃ
মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যকারী ভারতের রাজনীতিবিদ বিজেপির বহিষ্কৃত নেত্রী নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় সদরের মির্জাপুর আদর্শ কলেজের অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হচ্ছে এবং বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অব্যাহতি দিয়ে অন্য এক শিক্ষক আক্তার হোসেন টিংকুকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার (১৮ জুন) সংঘর্ষের পর রোববার (১৯জুন) দুপুরের আগে মির্জাপুর কলেজের হলরুমে নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তি স্থানীয়দের সাথে এক বৈঠকে দোষির শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) পর্যন্ত কলেজ বন্ধ এবং বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অব্যাহতি দিয়ে অন্য এক শিক্ষককে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, মির্জাপুর কলেজের সভাপতি অ্যাডভোকেট অচিন চক্রবর্ত্তী, নতুন দায়িত্ব পাওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আক্তার হোসেন টিংকু, সদর থানার ওসি শওকত কবির, স্থানীয় বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান হেমায়েত ফকির প্রমুখ।
জানা গেছে, মির্জাপুর আদর্শ কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় গত তিন দিন আগে নিজের ফেসবুক আইডিতে নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে মন্তব্য করেন, “প্রনাম নিও বস ‘নূপুর শর্মা’ জয় শ্রী রাম”। শনিবার (১৮ জুন) সকালে রাহুল কলেজে আসার পর তার বন্ধুরা এ পোস্টটি মুছে ফেলতে বললেও সে তা করেনি। তখন ছাত্ররা বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের কাছে নালিশ জানায়। একপর্যায়ে অধ্যক্ষ কলেজের অন্যান্য শিক্ষকদের ডেকে এনে রাহুলকে স্থানীয় বিছালী পুলিশ ফাঁড়ির ক্যাম্প ইনচার্জ ও সদর থানার ওসির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় কয়েক’শ ছাত্র-স্থানীয় জনগনের উপস্থিতিতে কলেজ ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিকেল ৪টার দিকে উচ্ছৃংল ছাত্র-জনতা কলেজের গ্যারেজে থাকা শিক্ষকদের ৩টি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এ সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করে। এ ঘটনায় একজন কলেজ শিক্ষকসহ ১০ জন ছাত্র-জনতা ও ২ পুলিশ সামান্য আহত হয়। পরে পুলিশ সুপার এবং নড়াইলের জেলা প্রশাসক মো: হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে দোষির উপযুক্ত শাস্তির আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। এ সময় অভিযুক্ত রাহুলকে পুলিশ আটক করে।
সদর থানার ওসি শওকত কবীর জানান, ঘটে যাওয়া ঘটনায় এলাকায় শান্তি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। মামলা লেখার কাজ চলছে।
নতুন দায়িত্ব পাওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আক্তার হোসেন টিংকু বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং রেজুলেশনের মাধ্যমে আমাকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
Leave a Reply