এম, এন উদ্দিন
পিরোজপুর প্রতিনিধি
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার গভীর রাতে উপজেলার ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সামনে প্রাইভেট ক্লিনিক মাতৃসেবায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার বিবরণ-দক্ষিণ ইন্দুরকানী গ্রামের মহিদুল হাওলাদারের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী নাসিমা বেগম (৩৫) সন্তান ডেলিভারীর জন্য অসুস্থ হয়ে পরলে স্থানীয় ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চালু না থাকায় হাসপাতালের সামনে মাতৃসেবা ক্লিনিকে নিয়ে যায়।
এ সময় ক্লিনিকের কর্তব্যরত নার্স ও ডাক্তারের সহকারী রাজীব রায় রুগীকে দ্রুত ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করে।
এক পর্যায়ে তারা রুগীর অভিভাবকদের নিকট থেকে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর নিয়ে পরবর্তী চিকিসার জন্য প্রস্তুতি নেয়।
ঘটনাস্থলে থাকা অসুস্থ নাসিমার স্বামীর ভাইয়ের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম বলেন, আমরা রুগীকে পিরোজপুর হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে ক্লিনিকের স্টাফরা রুগীকে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে নিষেধ করেন এবং তারা নরমাল ডেলিভারি করতে পারবে বলে আশ্বাস দেয়। পরে নাসিমকে আল্ট্রাসনোগ্রাম এর জন্য নিয়ে যায় এবং নাসিমার অবস্থা খারাপ হলে তাকে স্যালাইন পুশ করলে পানির পিপাসা লাগে। এ সময় তাদের অফিস থেকে একটি শিশিতে থাকা নতুন পানিয় দ্রব্য পান করায়। সাথে সাথে অসুস্থ নাসিমার একধার কালো হয়ে যায় এবং সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে মুখ থেকে লালা বের হয় এবং খিচুনি উঠে।
নিহত নাসিমা বেগম এর স্বামী মহিদুল জানায়, আমার স্ত্রীকে এখানে নিয়ে আসার পরে ডাক্তার না থাকায় আমি অন্যত্র নিয়ে যাইতে চাইলে ক্লিনিকের স্টাফ রাজিব রায় তাকে জোর পূর্বক ভর্তি করে এবং আমার কাছ থেকে কয়েকটি কাগজে স্বাক্ষর নেয়। পরে আমার স্ত্রীকে পানি পান করালে তার মুখ কালো হয়ে মুখ থেকে লালা বের হয়ে যায়।
তখনই সে হয়তো আমাদের ছেড়ে চলে যায়। তাকে পিরোজপুর হাসপাতালে নেওয়ার পরেই ডাক্তার বলেন অনেক আগেই রোগী মারা গেছে। তাদের ভুল চিকিসার কারণে আমার স্ত্রী মারা যায়।
ঘটনা স্থলে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী রাসেল জানান, আমি ঘটনার শুরু থেকেই রোগীর সাথে ছিলাম আমরা রোগীকে ক্লিনিকে নিয়ে আসলে তারা নরমাল ডেলিভারি করতে পারবে বলে আশ্বাস দেয়। কিন্তু তাদের ভুল চিকিৎসার জন্য রোগী মারা যায়।
অভিযুক্ত রাজিব রায় জানায়, রুগীর স্বজনরা আমাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে আসে পরে আমরা রোগীকে ক্লিনিকে ভর্তি করাই। এবং রোগীর কয়েকটি পরিক্ষা করে দেখি রোগীর অবস্থা গুরত্বর। পরে আমি ডাঃ মতিন স্যারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি রোগীকে পিরোজপুর দেশ ক্লিনিকে পাঠিয়ে দিতে বললে আমি তাকে এ্যাম্বুলেন্স ডেকে পিরোজপুর পাঠিয়ে দেই।
এব্যাপারে ক্লিনিকের মালিক ডাঃ মতিন সরদার মুঠো ফোনে বলেন আমার সহকারী রাজীব আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি রোগীকে দ্রুত পিরোজপুর দেশ ক্লিনিকে পাঠিয়ে দিতে বলি। পরে আমি জানতে পারি রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
ইন্দুরকানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে এখনো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
পিরোজপুর প্রতিনিধি
Leave a Reply