নিউজ ডেস্ক :
আওয়ামীলীগ সভাপতি ও তৎকালীণ বিরোধীদলীয় নেত্রি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার মৃত্যুদদন্ডপ্রাপ্ত আসামি বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টুকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ২টার দিকে পাবনার গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয় থেকে কড়া নিরাপত্তায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত শনিবার কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ট্রেনযোগে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাওয়ার পথে ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে পৌঁছালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রি শেখ হাসিনাকে বহনকারী বগি লক্ষ করে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ওই ঘটনায় পাবনার ঈশ্বরদীর জিআরপি থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিআইডি ১৯৯৭ সালে সর্বমোট ৫২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
এর মধ্যে পাঁচ জন আসামি মারা যাওয়ায় তাদের ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আর বাকি ৪৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৯ সালের ৩ জুলাই জাকারিয়া পিন্টুসহ ৯ জন বিএনপি নেতাকে ফাসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ১৩ জনকে ১০ বছর মেয়াদে কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয় বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম।
তিনি জানান, জাকারিয়া পিন্টুর নেতৃত্বে ঈশ্বরদীতে আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, মারামারিসহ বিভিন্ন অরাজকতা চলতো। প্রথমে ১৯৮৮ সালে ও পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ততায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। সেসব মামলায় গ্রেফতার এড়াতে তিনি এলাকা ত্যাগ করে ২০০৪ সাল থেকে ঢাকার মিরপুরে বসবাস শুরু করেন। তার পরিবার ঢাকায় থাকলেও তিনি নিয়মিত ঈশ্বরদীতে যাতায়াত করতেন। তিনি ২০১৫ সালে ঈশ্বরদীতে উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং পরাজিত হন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম আরও জানান, পিন্টু ১৯৯৪ সালে ঈশ্বরদীতে চম্পা হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামি। এ ছাড়া ২০০৯ সালে ঈশ্বরদীতে আজম হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাবরণ করেন। পরে ২০১১ সালে অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাঁকে গ্রেফতার করে। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে কুষ্টিয়া ভেড়ামারা থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় তিনি তিন মাস কারাভোগ করলেও পরে জামিনে মুক্ত হয়ে ফেরারি হন। সে মামলায় আদালত তাঁকে ১৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। এ ছাড়া ২০১২, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে আধিপত্য বিস্তার বিভিন্ন সন্ত্রাসী ও ধ্বংসাত্বক কর্মকান্ডের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০টি মামলা হয়। এ পর্যন্ত তাঁর নামে একটি মৃতুদন্ড ও একটি ১৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের সাজা পরোয়ানা ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধে ছয়টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় সর্বমোট ২৪টি মামলা রয়েছে বলে জানান মাসুদ আলম।
Leave a Reply