নড়াইল প্রতিনিধি
মহান মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণ করে একটি সড়কে ১৯৭১টি এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে ৭১টি করে ফলজ, ঔষুধি ও ফুলের গাছ লাগাবেন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার খাশিয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম বরকত উল্লাহ। সরকারী অর্থায়নে নয়, ব্যক্তিগত ও বন্ধুদের আর্থিক সহযোগিতায় তিনি বৃক্ষরোপনের ব্যতিক্রমধর্মী এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। ইউনিয়নের প্রতিটি বাড়িতে তিনি ফুল ও ফলের চারা রোপন করবেন।
শুক্রবার সকাল থেকে বড়দিয়া-কালিয়া সড়কের খাশিয়াল ইউনিয়নের সীমানা পর্যন্ত বৃক্ষরোপন কর্মসূচি করা হয়েছে। আর এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন খাশিয়াল ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ।
ব্যাংক এশিয়া বড়দিয়া এজেন্ট শাখার ব্যবস্থাপক প্রবীর কুমার রায়ের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য তুলে ধরেন খাশিয়াল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএম বরকত উল্লাহ, বড়দিয়া কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোল্যা সাখাওয়াত হোসেন, ডাঃ জগদ্বীশ চন্দ্র সরকার, জনতা ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক নিরঞ্জন দাশ ঝন্টু, দি পাটনা একাডেমীর সাবেক প্রধান শিক্ষক মোল্যা শাহাদৎ হোসেন, খাশিয়াল আদর্শ বিদ্যাপীঠের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মফিজুর রহমান, বড়দিয়া কলেজের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক মৃনাল কান্তি বিশ্বাস, শান্তি কুমার অধিকারী, বড়দিয়া মুন্সী মানিক মিয়া ডিগ্রী কলেজের গভর্নিংবডির সদস্য শিমুল মোল্যা সহ প্রমুখ।
বক্তব্যকালে অধ্যাপক মোল্যা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘গ্রীন হাউজ ইফেক্টের প্রভাবে সারা বিশ্ব এখন বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছে। ঠিক সেই মুহুর্তে খাশিয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ব্যক্তিগতভাবে ও বন্ধুদের সহযোগিতা নিয়ে যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা অবশ্যই প্রশংসনীয়।’
ডাঃ জগদ্বীশ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘গাছের অক্সিজেন নিয়ে আমরা বেঁচে থাকি এবং আমরা যে কার্বনডাই অক্সাইড বের করে দেই গাছ সেটা শোষন করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই গাছের রক্ষনাবেক্ষন ও পরিচর্যা করে বাঁচিয়ে রাখার উদ্যোগও নিতে হবে।’
জনতা ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক নিরঞ্জন দাশ ঝন্টু যুগান্তকারী পদক্ষেপের ভুয়সী প্রশংসা করে বলেন, একটি গাছ কাঁটলে সেখানে আরো দুটি গাছ লাগাবো। কারণ আগামী প্রজন্মের সুখ স্বাচ্ছন্দের জন্য গাছের কোন বিকল্প নেই।’
খাশিয়াল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএম বরকত উল্লাহ বলেন, আমাদের লক্ষ্য ধনী-গরীব নির্বিশেষে প্রত্যেকটি বাড়ীতে একটি ফল ও ফুলের গাছ পৌঁছে দেয়া। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণ করে আমরা বড়দিয়া-কালিয়া সড়কের খাশিয়াল ইউনিয়নের সীমানা পর্যন্ত ১৯৭১টি ফলজ, ঔষধি ও ফুলের চারা রোপন করছি। যেহেতু কাঠের গাছ সব জায়গায় আছে তাই কাঠের কোন গাছ লাগানো থেকে বিরত রয়েছি। এছাড়া ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ৭১টি পরিবারের মাঝে একটি করে ফল ও ফুলের চারা বিতরণ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ইউনিয়নের প্রতিটি বাড়িতেই ফল ও ফুলের চারা বিতরণ করা হবে। তাছাড়া ইউনিয়নের প্রতিটি সড়কে বৃক্ষরোপন করা হবে। আমি মনে করি এভাবে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে জনপ্রতিনিধিরা এমন উদ্যোগ নিলে সরকারের বৃক্ষরোপনের দিকে এতো বেশি তোড়জোড় করতে হবে না। সরকারের ব্যয় অনেকটা কমে আসবে।
এদিকে সড়কের পাশে ও বাড়িতে বৃক্ষরোপনের এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগে খুশি ইউনিয়নাসী। বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের সাথে আলাপকালে তাঁরা জানান, এসব গাছ যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে সবাই আন্তরিকভাবে খেয়াল রাখবেন।
Leave a Reply